১১ বছর আগের সেই ঘটনা আজও মনে প্রশ্ন জাগায়, দাগ কাটে মানুষের মনে। ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ। স্থান জ্যামাইকার পেগাসাস হোটেল। বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে পাকিস্তানের লজ্জার পরাজয়ের কয়েক ঘন্টা পেরোয়নি। পাকিস্তানের কোচ বব উলমার কোনো এক হতাশা নিয়ে ১২ তলার ৩৭৪ নম্বর রুমে ঢোকেন।
যে রুম থেকে আর কোনোদিন হেটে বের হননি বব উলমার। নিরাপত্তা কর্মীরা পরদিন সকালে বাথরুমে আবিস্কার করেন তার প্রাণহীন নিথর দেহ। বিশ্বকাপ চলাকালীন এই ঘটনা ভয় ধরিয়ে দেয় সবার মনে। সে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে পরের পর্বে উঠেছিল।
বব উলমারের শরীরে দাগ থাকায়, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে বলা হয় বল প্রয়োগ কিংবা খাদ্যে বিষক্রীয়ায় মারা গেছে উলমার। পাকিস্তান ক্রিকেটে জুয়ার প্রভাব সবারই জানা। তবে কি আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে হারার ম্যাচে ফিক্সিং করেছিল জুয়াড়িরা। আর তা জেনে ফেলায় এই করুন পরিনতি বব অ্যান্ড্রু উলমারের?
বিষয়টি আরও ঘোলাটে হয় পাকিস্তানের এক স্টাফের মুখে মারামারির দাগ থাকায়।পাকিস্তানি খেলোয়াড়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় কয়েক দফায়। তদন্তের মধ্যবর্তী সময়ে জানানো হয় খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা যান উলমার। সে রাতে উলমারকে খাবার দিয়ে যান হোটেল কর্মী।
কি দিয়েছিলেন উলমারকে খেতে? তা নাকি নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি হোটেল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। উলমারের ঘাড়ে নাকি কোনো দাগ পাওয়া যায়নি। অ্যাজমার সমস্যা ছিলো উলমারের। সেখান থেকেই নাকি কাশির তোড়ে শ্বাস রোধ হয়ে মারা যান পাকিস্তানের সাবেক এই কোচ। স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ায় বন্ধ করা হয় কেস।
তবে আজও মানুষের মনে প্রশ্ন জাগায় উলমারের নাকে মুখে আঘাতের দাগ এল কোথা থেকে? তাকে কি খেতে দেয়া হয়েছিল, কারাইবা দিয়েছিল। লাস্ট সাপারে তার সঙ্গে কে ছিল? এসব প্রশ্নের উত্তরেরও মৃত্যু হয়েছে উলমারের মৃত্যুর সঙ্গে। আর অজানা এসব বিষয়ের কোনো সমাধান না থাকায় অনেক ক্রিকেট ভক্তের মনে আজও অসমাপ্ত থেকে গেছে বব অ্যন্ড্রু উলমারের মৃত্যু রহস্য।