ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভ আছে। । এই পাঁচটি বিষয়ের উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা প্রত্যেক মুসলমালের জন্য ফরজ।একই সাথে প্রথম তিনটির উপর আমল করা সকল মুসলমানের জন্য ফরজ এবং শেষ দু’টি সামর্থ অনুযায়ী আদায় করা ফরজ বা অবশ্য পালনীয় কাজ।পাঁচটি স্তম্ভ হল
- শাহাদাহ্
- নামাজ
- রোযা
- যাকাত
- হজ্জ্ব
নামাজ বা সালাত হল ইসলাম ধর্মের প্রধান ইবাদাত বা উপাসনাকর্ম। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক বা ফরজ। নামায ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয়। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাস এর কারণে সৌদি আরব সহ বেশ কিছু রাষ্ট্রে জুমা সহ মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধের কর্মসূচী স
আজানে শব্দ পরিবর্তন নিয়ে ইসলামের কথা
সম্প্রতি কুয়েতের একটি আজান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে আজানের মাধ্যমে মুয়াজ্জিন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ (নামাজে আসো) যে লাইনটির জায়গায় বলছেন ‘আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম।’ অর্থ্যাৎ ঘরে বসে নামাজ আদায় করো। আজানে মুয়াজ্জিন অপরিচিত এই বাক্য শুনে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। আলোচনা চলছে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
এ নিয়েও আমাদের দেশের কতিপয় মুফতি মাসআলা দেয়া শুরু করেছেন। আজান বিকৃত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করছেন।
আজানে এই শব্দ ব্যবহার করা যায় কিনা সেসম্পর্কে জামিয়া আম্বরশাহ আল ইসলামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি তায়্যিব আহমদ বলেন, বুখারি ও মুসলিম শরিফের দুটি হাদিস আছে এসম্পর্কে।
একবার হজরত ওমর (রা.) প্রচন্ড শীতের রাতে জজনান নামক জায়গায় আজান দেন। তিনি আজানের পর “সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম” বলেন। মানে হচ্ছে তোমরা তাবুতে নামাজ আদায় কর।
এরপর হজরত ওমর (রা.) বলেন, “নবি করিম (সা.) প্রচন্ড শীতের রাতে তিনি মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলতেন এবং আজানের পর পর তিনি বলতেন আলা সাল্লু ফি রিহাল। মানে তোমরা তোমাদের তাবুতে নামাজ আদায় করো।”
আরেকটি হাদিসে আছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) প্রচন্ড বৃষ্টির রাতে তিনি মুয়াজ্জিনকে বলেন, “তিনি যেনো হাইয়া আলাস সালাহ’র পরিবর্তে ‘আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম’ বলেন। “
পরবর্তীতে মুসল্লিরা এসম্পর্কে আলোচনা শুরু করলে তিনি বলেন, “আমার চেয়েও উত্তম যিনি মুহাম্মদ (সা.), তিনি প্রচন্ড শীত বা বৃষ্টির রাতে মুয়াজ্জিনকে সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম বা সাল্লু ফি রিহালিকুম বলতে বলেছেন।”
মুফতি তায়্যিব আহমদ বলেন, “এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায় যে, আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম বা সাল্লু ফি রিহালিকুম এই শব্দগুলো বলা যায়, যদি প্রচন্ড বৃষ্টি, শীত ও মহামারি দেখা দেয় সেসময়।”
এই দুটি হাদিসে দেখা যায় যে, একটি হাদিসে বলা হচ্ছে আজানের পর এই শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আরেকটি হাদিসে আজানের ভেতর এই শব্দ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। এ থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে মহামারিতে আজানের শব্দের পরিবর্তন আগেও ছিল। সুতরাং এটা নিয়ে সংশয় আর না থাকাই ভালো।
জুমা বন্ধের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশ
দুর্যোগের কারণে জামাতে নামাজ ত্যাগের অবকাশ যেমন আছে প্রয়োজনে মসজিদে জুমা বন্ধ করার নির্দেশ আসলে সেটাও শরীয়তের দৃষ্টিতে অসম্ভব নয়।
সায়্যিদুনা উমারের সময় প্লেগে পঁচিশ থেকে ত্রিশ হাজার সাহাবি ও তাবেঊন ইন্তেকাল করেন, কিন্তু তারা মসজিদ বন্ধ করেছিলেন এ মর্মে কোন দলিল পাওয়া যায়নি।
তবে কর্ডোভায় এক মহামারিতে মসজিদ বন্ধ ছিলো বলে ইমাম যাহাবি উল্লেখ করেছেন।
ইসলামের সবচেয়ে প্রকাশ্য মোজেযা হলো সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে তাকে সোজাসুজি ভাবেও যেমন মেনে চলা যায়, অনুরূপভাবে খুব কঠিন সন্দিক্ষণেও তাকে সাথে নিয়ে জীবন পার করা যায়।
মহামারির ক্ষেত্রে ইতিহাস যেমন বলেনা যে মুসলিমগণ তাদের মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছিলো কোন এক মহামারিতে। অনুরূপ ভাবে এখন বন্ধ করে দিলেও ইসলামি “মাক্বাসিদ শারীয়ার” সাথে সাংঘর্ষিক হবেনা, আলহামদুলিল্লাহ।
পরিশেষে, করোনা এর মতন ভয়াবহ ভাইরাস এর নেই কোন প্রতিষধক। একমাত্র আমাদের দোয়া ও সচেতনতাই পারে এই কঠিন ভাইরাস এর মোকাবেলা করতে। তাই আমাদের এখন উচিত ঘরে বসে আল্লাহ এর কাছে তওবা ইস্তেগফার করা এবং বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ে আল্লাহ কে ডাকা।