তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে দেশে শুরু হয়েছে ই-অ্যাওয়ারনেস অলিম্পিয়াড ‘সাইবার চ্যাম্প’। সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে এই অলিম্পিয়াডের আয়োজন করছে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডিনেট।
শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে ডিনেট একটি ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটে সুরক্ষা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, নিরাপত্তা, ডিজিটাল আইন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের নিয়মাবলী, সাইবার অপরাধ, গুজব, অনলাইনে সহিংস উগ্রবাদের প্রচারে বিরোধিতা, মিথ্যাচার ও ভুল খবর প্রচার এবং এ সংক্রান্ত আরো অনেক বিষয়ে তথ্য থাকছে এই প্ল্যাটফর্মে।
বাংলাদেশের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথমবারের মত আয়োজন করা হচ্ছে এই অলিম্পিয়াড।
এই ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করার জন্যে থাকছে বিভিন্ন কন্টেন্ট এবং সেই সম্পর্কিত ২০ রাউন্ড কুইজ। প্রতি রাউন্ডে সেরা ১০ বিজয়ীর জন্যে থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার। সবগুলো কুইজে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি নাম্বার প্রাপ্ত ২০০ শিক্ষার্থী সুযোগ পাবে বাংলাদেশের প্রথম ই-সচেতনতা অলিম্পিয়াড সাইবার চ্যাম্পে এবং তাদেরই একজন হবে বাংলাদেশের প্রথম সাইবার চ্যাম্প!
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে,সেখানে সুরক্ষিত ইন্টারনেট ও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আয়োজন করবে এই লার্নিং সেশনের।প্রতিটি লার্নিং সেশনের সর্বোচ্চ স্কোরার সহ সেরা ১৫০ স্কোরার হবে ‘ক্যাম্পাস সাইবার চ্যাম্প’। তারাও আসবে সাইবার চ্যাম্প অলিম্পিয়াডে। তাদের সাথে আরও আসবে উক্ত ১০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে করা পিয়ার লার্নিং সেশন থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থী ‘ভলান্টিয়ার সাইবার চ্যাম্প’ হিসেবে।
এই ই-অ্যাওয়ারনেস অলিম্পিয়াডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে– http://www.cyberchamp.com.bd
এই সাইটে থাকছে সাইবার সচেতনতা ও সুরক্ষিত সাইবার ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কনটেন্ট। এই কনটেন্টগুলো যেকোনো শিক্ষার্থীরা পড়তে পারবে।এর সাথে কনটেন্টগুলো নিয়ে থাকছে কুইজ প্রতিযোগিতা।
এই কুইজগুলোতে অংশ নিতে হলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
প্রতিটি কনটেন্টের ওপর একটি করে কুইজ রাউন্ড থাকবে। ওই নির্দিষ্ট কনটেন্টের মধ্যেই কুইজের উত্তর থাকবে।
কুইজের বিস্তারিত:
- সব মিলিয়ে থাকছে ২০ রাউন্ড কুইজ।
- প্রতি কুইজ রাউন্ডে ১০টি করে প্রশ্ন থাকবে।
- প্রতি সপ্তাহেই থাকবে নতুন একটি কুইজ।
- প্রতি রাউন্ডের জন্য নির্ধারিত সময়ে কেবল একবারই ওই কুইজটি খেলা যাবে।
- প্রতি রাউন্ডে সেরা ১০ স্কোরারের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় সব পুরস্কার। প্রতি রাউন্ডে সবার আগে দ্রুততম সময়ে সবচেয়ে বেশি সঠিক উত্তর প্রদানকারী ১০ জন হবে বিজয়ী। বিজয়ী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ডিনেট-এর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
- প্রতিটি রাউন্ডের নির্ধারিত সময় শেষে কুইজটি যতবার খুশি ততবার খেলা যাবে। এবং ঐ রাউন্ডে সর্বোচ্চ স্কোর ব্যক্তিগত সর্বমোট পয়েন্টের সাথে যোগ হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কেউ নির্ধারিত সময়ের পরে কুইজ খেললে ঐ বিশেষ রাউন্ডের ক্ষেত্রে পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে না।
- ২০ রাউন্ড কুইজ শেষে সম্মিলিত পয়েন্ট তালিকায় থাকা সেরা শিক্ষার্থীরা পাবে ই-অ্যাওয়ারনেস অলিম্পিয়াডে আসার টিকেট।
- শুধুমাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরাই কুইজের পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। ২০ রাউন্ডের সবগুলোতে অংশ নিয়ে যারা ৬০% পয়েন্ট স্কোর করতে পারবে, তারা সবাই পাবে এই বিশেষ অনলাইন সার্টিফিকেট।
- ই-অ্যাওয়ারনেস অলিম্পিয়াডের বিজয়ীরা নোটবুক, ট্যাব, সার্টিফিকেট ইত্যাদি পুরস্কারও পাবে।
ই-অ্যাওয়ারনেস অলিম্পিয়াডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
উক্ত অলিম্পিয়াডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজধানীর বাংলা, ইংরেজি ও মাদ্রাসা মাধ্যমের শতাধিক শিক্ষার্থী-শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনীর হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান জিয়া রহমান,দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, ইউএসএআইডি’র গর্ভনেন্স বিষয়ক উপদেষ্টা রুমানা আমিন।