চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর বিশ্বের বাকি দেশগুলোকে আশার আলো দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
তিন জানান, প্রথমবারের মতো উহানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি।
ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য আশা দেখাচ্ছে উহান। এমনকি এই জটিল পরিস্থিতিতেও আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করে চলব। এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। কিন্তু উহানের মতো দু-একটি শহরের ঘুরে দাঁড়ানো আশার আলো দেখাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে তরুণদের আরও সতর্ক থাকার আহ্বান করেন টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস। তিন বলেন, মহামারি মোকাবিলায় তরুণেরা ‘অজেয় নয়’। তরুণদের নিয়ন্ত্রিত চলাফেরা বৃদ্ধদের জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘তরুণদের জন্য আমার একটি বার্তা আছে: তোমরা “অজেয় নও”। এই ভাইরাস তোমাদের কয়েক সপ্তাহের জন্য হাসপাতালে পাঠাতে পারে।
এমনকি মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দিতে পারে। হয়তো তোমাদের অসুখ হবে না। কিন্তু তোমাদের অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরা আরেকজনকে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে ঠেলে দিতে পারে।’
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃত মানুষের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশে এই ভাইরাসের আক্রমণ দেখা যায়। করোনাভাইরাসের নতুন কেন্দ্রস্থল ইউরোপ।
এই ভাইরাসে টালমাটাল ইতালি। গত ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে সর্বোচ্চ ৬২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এখন মৃত মানুষের সংখ্যা ৪ হাজার ৩২।
স্পেন জানিয়েছে, দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩২ শতাংশ বেড়ে গেছে। মৃত্যুর দিক দিয়ে ইতালির পরেই এখন স্পেনের অবস্থান। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩২৬ জন।
দেশটির ৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষকে লকডাউন অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। শুধুমাত্র জরুরি কাজ, খাবার কেনা, ঔষধ কেনা অথবা কুকুরকে হাঁটানোর জন্য তারা বাইরে বের হতে পারবেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সতর্ক করে দিয়েছেন যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শ্লথ করতে জনগণ যদি সহায়তা না করে, তাহলে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়তে পারে।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, যারা সামাজিক বিচ্ছিন্নতার বিষয়গুলো মানছেন না, তারা দেশের জন্য ‘বিপজ্জনক’ এবং ‘দায়িত্বহীন’। দেশটিতে ১২,৫০০ জনের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং ৫৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ডু কুমো তরুণদের সতর্ক করে দিয়েছেন, যাতে তারা দলবদ্ধভাবে চলাফেরা না করে।
তিনি বলেছেন, ”এটা একটা জনস্বাস্থ্যের ব্যাপার এবং আপনি অন্য মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারেন না, এমনকি আপনার নিজের স্বাস্থ্যের জন্যেও নয়।”