বিতরণ ব্যবস্থায় অনিয়ম ও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকায় ঢাকায় ওএমএস(খোলা বাজার বিক্রি) এর আওতায় ১০ টাকায় চাল বিক্রি বন্ধ করা হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, রাজধানী ঢাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি। তাই জনসমাগম ঠেকাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে চলমান সাধারণ ছুটির সময় নিম্ন আয়ের মানুষের সামাজিক সুরক্ষায় গ্রামের পাশাপাশি শহরেও গত ৫ এপ্রিল থেকে ওএমএসের আওতায় ১০ টাকা!কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু এর মধ্যেই ঢাকা শহরে ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ওএমএস
১০ টাকায় চাল বিক্রির কার্যক্রম আগে শুধু গ্রাম এলাকায় ছিলো। এখন শহরেও দেওয়া হবে। গ্রামে ১০ টাকায় চাল বিক্রির কার্যক্রম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নামে পরিচিত ছিল। শহরে বিক্রি হবে ওএমএস নামে।
শহরে ১০ টাকায় চাল বিক্রির নীতিমালা অনুযায়ী, ভোটার আইডি কার্ড দেখিয়ে চাল নেওয়ার কথা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে এ চাল দেওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ, এসব নিয়ম মানা হচ্ছে না। চাল বিতরণ ব্যবস্থায় ডিসি অফিসগুলো যথাযথ ভূমিকা রাখছে না।
প্রত্যেক জেলায় ডিসির নেতৃত্বে একটি কমিটি আছে। যেটিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আছেন। এ কমিটির এলাকাভিত্তিক সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করার কথা। এর পরও দেখা যাচ্ছে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে চাল ঠিকমতো কেন যাচ্ছে না সে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
নিয়মানুযায়ী একটি পরিবারের সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু চলে যাচ্ছে ৩০ কেজি কিংবা তারও বেশি। একই পরিবারের একাধিক সদস্যসীমার অতিরিক্ত চাল কিনছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার একই ব্যক্তি বারবার লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে ভিড় বেশি হচ্ছে। ফলে বাড়ছে করোনা ঝুঁকিও।
করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় বিশেষ ওএমএসের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘করোনাভাইরাসের ফলে নিদমজুর, রিকশাচালক, ভ্যান চালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুর, তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সকল কর্মহীন মানুষকে এর আওতায় এনে বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সরোয়ার আলম বলেন, “কর্মহীন মানুষ এর সুবিধা না পেলে এ কর্মসূচি চালুর উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, অন্যরা এর ফায়দা লুটে নিচ্ছে।
আইডি কার্ড দেখা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, লোকের এত বেশি চাপ যে, আইডি কার্ড ঠিকমতো তদারকি করা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়েও এত লোককে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এখন নতুন করে লিস্ট হচ্ছে, যাতে সত্যিই পাওয়ার যোগ্য মানুষদের কাছে এর সুবিধা পৌঁছায়।”
খাদ্য সচিব বলেন দশ টাকায় চাল সহ রেশন নিয়ে যারা কালোবাজারি করছে তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে। তাদের নামে মামলা হচ্ছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত বিচারের আওতায় আনা হবে।