করোনাভাইরাসের নতুন ধরণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র- সিডিসির পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর মো. নাজমুল ইসলামের রবিবার স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে এসব নির্দেশনার উল্লেখ রয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশে নতুন ধরণের করোনাভাইরাস সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন (বি.১.১৫২৯) এর সংক্রমণ দেখা দেয়ায় ‘অধিকতর সতর্কতা’ অবলম্বন করতে হবে।
চিঠিতে নির্দেশনাগুলোকে ‘কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ’ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে:
১. সাউথ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসোথো এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সময় সময় ঘোষিত অন্যান্য আক্রান্ত দেশ থেকে আগত যাত্রীদের বন্দরসমূহে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে।
২. সব ধরনের (সামাজিক/ রাজনৈতিক/ ধর্মীয়/ অন্যান্য) জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।
৩. প্রয়োজনে বাইরে গেলে সবাইকে বাড়ির বাইরে সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পড়াসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. রেস্তোরাঁতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ধারন ক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম করতে হবে।
৫. সকল প্রকার জনসমাবেশ, পর্যটন স্থান, বিনোদন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/ থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করতে পারবে।
৬. মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
৮. আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
৯. সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (সকল মাদ্রাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
১০. সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবা গ্রহীতা, সেবা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
১১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১২. করোনা উপসর্গ/লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও করোনা পজিটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. কোভিড-১৯ এর লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে।
১৪. অফিসে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সময়ে বাধ্যতামূলকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
১৫. কোভিড-১৯ রোগ নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস করার নিমিত্তে কমিউনিটি পর্যায়ে মাস্ক পড়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকিং ও প্রচারণা চালানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মসজিদ/ মন্দির/ গির্জা/ প্যাগোডার মাইক ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর/ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।
এই নির্দেশনাগুলো দেশব্যাপী কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালিসহ এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৩টি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগ সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা বা অন্য কোনো দেশে গিয়েছিলেন।