কথায় আছে “মন ভালো তো সব ভালো।” আর শরীরটাকে ফিট রাখতে হলে দরকার নিয়মিত শরীরচর্চা। করোনা মহামারিতে জিমনেসিয়ামগুলোতে গিয়ে শরীরচর্চা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু এ সময়টাতে শরীরচর্চা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ঘুম ঠিক রাখা ও মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকার জন্য শরীরচর্চা আবশ্যক। যেহেতু জিমনেসিয়াম গুলোতে গিয়া শরীরচর্চা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ সেহেতু ঘরে বসেই শরীর ও মন ফিট রাখতে বিকল্প উপায়ে সারতে হবে শরীরচর্চা ।
এখন কথা হলো ঘরে বসেই কিভাবে শরীরচর্চা করা যায়?
এক্ষেত্রে শরীরচর্চার জন্য যেসব বিষয় কাজে দিতে পারে সেগুলো হলোঃ
- পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে যোগব্যায়াম করা যেতে পারে। বাসার সামনে খালি জায়গা থাকলে পরিবারের সবাই মিলে ক্রিকেট অথবা ফুটবল খেলা যেতে পারে। এটি হতে পারে পরিবারের সবাই মিলে একটু মজা করার সুযোগ এতে ব্যায়ামের ক্লান্তি অনেকটাই কমে যাবে।
- ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়ামগুলোও করা যেতে পারে। পরিবারের সবাই একসাথে ব্যায়াম করলে শুধু শরীরই না সাথে সাথে মনও প্রফুল্ল হয়ে উঠবে।
- এইসময় আপনার হাতের কাছের ইউটিউব হতে পারে আপনার শরীরচর্চার সবচেয়ে বড় ট্রেইনার। ইউটিউবে স্বাস্থ্যরক্ষার নানা টিপস ইউটিউবে আছে সেখান থেকে সাহায্য নেয়া যেতে পারে। এসব ভিডিও স্বাস্থ্যরক্ষার পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও ভুমিকা রাখতে পারে।
- ব্যায়ামের ক্ষেত্রে স্কোয়াটস, প্লাংকস, লুঙ্গেস এবং পুশ-আপ খুবই কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- বাসার উপকরণ গুলোও হতে পারে ব্যায়ামের সামগ্রী। যেমনঃ পানি ভর্তি ব্যাগ, ব্যাগ ভর্তি বই বা বিভিন্ন জিনিস দিয়ে বাজারের থলে পূর্ণ করে ব্যায়ামের সামগ্রী তৈরি করে নেয়া যেতে পারে।
আমাদের শরীরের পাশাপাশি মানষিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেয়া উচিত। মানসিক স্বাস্থ্য ধরে রাখতে কি কি করা উচিত সেগুলো জেনে নেয়া যাকঃ
- প্রতিদিন কিছুসময় ধ্যান বা মনের ব্যায়াম করা যায়।
- সোশ্যাল মিডিয়ার যত কম থাকা যায় তত ভালো।
- বেশিক্ষণ করোনা সম্পর্কিত কোন খবর না দেখা।
- গল্প, উপন্যাস, কবিতা এগুলো পড়া।
- সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা যেমনঃ ছবি আঁকা, গান গাওয়া, গল্প লেখা ইত্যাদি।
আমাদের শরীর ও মন সুস্থ রাখতে শরীরচর্চা যেমন জরুরি ঠিক তারচেয়েও বেশি জরুরি শরীরচর্চার সঠিক সময় বেছে নেওয়া। শুধু নিয়মিত ব্যায়াম করলেই যে শরীর সুস্থ থাকবে, সেটাও না। কোন সময়ে ব্যায়াম করা ভালো আর কখন ঠিক নয় সে বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত চিকিৎসক এ বি এম আবদুল্লাহর পরামর্শ হলোঃ
- সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম করা যেতে পারে। দীর্ঘ সময় ঘুমের পর সকালে ব্যায়াম সারাদিন ফুরফুরে রাখতে পারে।
- দুপুরে যেহেতু গরম বেশি থাকে তাই সেসময়ে একটু ব্যায়াম করলেই শরীর ক্লান্ত লাগতে পারে তাই দুপুরে ব্যায়াম না করাটাই ভালো।
- সন্ধ্যার আগে বিকেলটাও ব্যায়াম করার জন্য উপযুক্ত সময়। যেহেতু ব্যায়াম করলে শরীরে ঘাম হয় তাই নরম আবহাওয়াতেই ব্যায়াম করা ভালো।
- সারাদিন ব্যস্ততার কারণে রাতে ব্যায়াম করলেও কোন সমস্যা নেই।
- যারা সারাদিন বাসায় থাকেন তারা চাইলেই যেকোন সময় বাসায় ব্যায়াম করতে পারেন।
- ব্যায়ামের সময় বেশি খাওয়া ঠিক নয়। হালকা খাবার যেমন একটা কলা, বিস্কুট খেয়ে ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যাবে।
- সকালে ব্যায়ামের পরে অনেকে ভরপেট খেয়ে ফেলেন এতে করে ব্যায়ামের কোন উপকারিতা পাওয়া যায় না।
- ব্যায়াম করার আগে বা পরপরই বেশি পরিমাণে পানি খাওয়া ঠিক না হালকা বিশ্রাম নিয়ে তারপর পানি খেতে হবে।
- খাবারের মেন্যুতে যত সম্ভব মিষ্টি, কোমলপানীয়, ফাস্টফুড ইত্যাদি না রাখাই ভালো।
- যেকোন ধরনের ব্যায়াম বা ডায়েট পরিকল্পনার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেয়া ভালো।
অরো পড়ুন,
ঋতু পরিবর্তনের সর্দি-জ্বর প্রতিকার ও প্রতিরোধ
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন: কোভিড-১৯ রোগ পরবর্তী সংক্রমণ
রাসায়নিক দ্রব্যে পাকানো আম চেনার উপায়