একেক পর এক দেশকে গ্রাস করছে করোনা ভাইরাস। আক্রান্ত দেশগুলোর বেশির ভাগই পরিনত হয়েছে জনশুন্য মানবহীন। এ ভাইরাস যেকোনো বয়সের মানুষদের জন্যেই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। এছাড়া ঝুঁকি আছে কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্নদেরও।
ডায়াবেটিসের রোগীরা কেন ঝুঁকিতেঃ
আমাদের দেশের বেশির ভাগ বয়স্করাই ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হয়। যা তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এতে তাদের জীবানুর সাথে লড়াই ক্ষমতা হ্রাস পায়।
বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিসের রোগীর রক্তের শর্করা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি
এতে করোনা ভাইরাস তাদের দেহকে সহজেই সংক্রমিত করে। তাই তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ যত খারাপ, তার ঝুকি তত বেশি।
রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা ৭শতাংশের বেশি হওয়া মানেই অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। তাই করোনা ঝুঁকি এড়াতে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এ আনতে হবে। আর এজন্য তাদের কিছু করনীয় আছে।
করোনা প্রতিরোধে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়ঃ
১। করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোনো সিম্পটোম (জ্বর,কাশি,ঠান্ডা) দেখা দিলেই সরকার নির্দেশিত কেন্দ্রগুলোতে যোগাযোগ করতে হবে।
২। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে ইনসুলিন খুবই উপকারী। খালি পেটে শর্করা ৬মিলিমোলের কম আর খাবার দুই ঘন্টা পরে ৮মিলিমোলের কম মাত্রায় আনতে হবে
৩। করোনা সংক্রমনের উপসর্গ দেখা দিলে নিশ্চিত না হলেও নিজেকে আলাদা রাখা (কোয়ারেন্টাইনে থাকা)।
শরীর খারাপ না হলে হাসপাতালে না যাওয়াই ভাল। তবে নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে
৪। যাদের বয়স ষাটোর্ধ তাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে এবংবাড়িতে থেকে করোনা প্রতিরোধের উপসর্গ মেনে চলতে হবে।
জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৫। বাইরে বা পার্কে হাটার চেয়ে বাসায় বা বারান্দাতে হাটতে হবে ও হালকা ব্যয়াম করতে হবে
৬। কোনো কিছু ধরার পরপরই প্রায় ২০সেকেন্ড হাত ধুতে হবে ওকাপড় লন্ড্রিতে না দিয়ে বাসায় ইস্ত্রি করতে হবে।
৭। বাড়িতে কেঊ অসুস্থ হলে তাকে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী থেকে নিরাপদ দুরত্বে রাখতে হবে
৮। বাহির থেকে আনা খাবার খাওয়া প্রত্যাহার করতে হবে।
পরিশেষে, করোনা ভাইরাস থেকে প্রতিকার পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে সচেতনতা।
“মহামারি আকারে ছড়িয়েছে করোনা,
আসুন না আমরা সবাই বাড়িয়ে দেই সচেতনতা;”
তাই নিজ সচেতনতার পাশাপাশি বাড়িতে থাকা অন্যান্য ডায়াবেটিস রোগীদেরও সচেতনতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাহলেই এই ভাইরাস কে মোকাবিলা করা সম্ভব।