শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট এর ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারের অনলাইন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার নির্দেশনা অনুসরণ করে গত ২৬ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত ঢাবিতে অনলাইন পরীক্ষা টি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহামারী করোনা ভাইরাসের উদ্ভুত পরিস্থিতির কারনে ২০২০ সালের ১৭ ই মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে এতদিন অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম চললেও সকল পরীক্ষা স্থগিত ছিলো। দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে, অনলাইনে নিতে বিভাগগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার পর ঢাবিতে অনলাইন পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশিকা এবং প্রকাশিত ভিডিও টিউটোরিয়াল মোতাবেক সুষ্ঠুভাবে নেওয়া হয়েছে এই অনলাইন পরীক্ষা।
এর আগে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে অনলাইনে নিতে ঢাবিতে অনলাইন পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অনলাইন পরীক্ষা সম্পর্কে ইংরেজি ভাষা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,
নানা ধরনের সংশয়-শঙ্কা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাটা আমরা দিতে পারলাম, এটা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়। এই পর্যায়ে এসে সময় নষ্ট কাম্য না, সেক্ষেত্রে আমাদের বিভাগের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে আমরা অনেকটা হতাশা থেকে মুক্ত হতে পারছি। পরীক্ষায় ছোটখাটো নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত সমস্যা ছাড়া, বড় কোনো সমস্যা হয়নি।
পরীক্ষা সম্পর্কে আরেক শিক্ষার্থী নুশরাত আরা বলেন,
অনলাইন পরীক্ষার বিষয়ে যে ভয়টা কাজ করছিল সেটা পরীক্ষা শুরুর আগ পর্যন্তই ছিল। পরীক্ষার দেওয়ার পর বুঝতে পারলাম ব্যাপারটা খুব সহজ। আমরা বেশিরভাগ শিক্ষার্থী গ্রামাঞ্চলে। তবে আমাদের তেমন বেগ পেতে হয়নি।
এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও কোর্স কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান বলেন,
দু-একটা পরীক্ষার জন্য দেড় বছরের বেশি সময় ঝুলে থাকায় শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তাছাড়া যেহেতু টিকাদান না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না, সেহেতু আপাতত অনলাইনের বিকল্প নেই। সবকিছু বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে, তাদের সম্মতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মেনে ইংরেজি ভাষা বিভাগের মাস্টার্সের পরীক্ষা অনলাইনে নিয়েছি। আর তাতে ব্যাচের ৩২ জন পরীক্ষার্থী সফলভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন,
এখন প্রত্যেক ব্যাচের দুটি করে সেমিস্টার আটকে আছে। আর একটু অপেক্ষা করলে তিনটা হয়ে যাবে। তখন বিষয়টা কঠিন হয়ে যাবে। সেটি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে অনলাইনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় কোনো জটিলতা নেই। শিক্ষক-শিক্ষার্থী কো-অপারেটিভ হলে সহজে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। আমরা অনলাইনে সব ব্যাচের পরীক্ষা নিয়ে নেব।
পরীক্ষা চলাকালীন সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন,
আমরা জুম এবং গুগল ক্লাসরুমের মাধ্যমে ক্যামেরা অন করেই পরীক্ষা নিয়েছি। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান করা সত্ত্বেও তেমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। কয়েকজন শিক্ষার্থী ডিসকানেক্ট হলেও তাদের আবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং তাদের জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য সব ধরনের অপশন রেখেছি।
অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন,
করোনা পরিস্থিতিতে বিভাগ/ইনস্টিটিউটগুলোকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি চায় বিভাগুলো পরীক্ষা নিতে পারবে। ইতোমধ্যে আমরা একটি নীতিমালাও করে দিয়েছি। এই নীতিমালা অনুযায়ী বিভাগগুলো পরীক্ষাও নিচ্ছে। আশা করছি পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগ অনলাইনে ফাইনাল পরীক্ষা নেবে এবং আমাদের শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারবে।
আরো দেখুন
খুবির প্রথম টার্মের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু ১২ সেপ্টেম্বর,
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় চুয়েটের একচ্ছত্র সাফল্য