বছরজুড়ে কালো গিলাফ বা কিসওয়ায় আবৃত থাকে পবিত্র কাবা শরিফ। প্রত্যেক বছর হজের দিন ৯ জিলহজ ফজরের পরপরই পরানো হয় নতুন গিলাফ। এটি পুরনো রেওয়াজ। হজে অংশগ্রহণকারী আরাফা মুজদালিফা ও মিনা থেকে ফিরে এসে নতুন গিলাফ দেখেই মুগ্ধ হয়।
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক মূখরিত ধ্বনিতে পুরো মক্কা শহর। ৯ জিলহজ্জ(সৌদি আরবের সময় অনুযায়ী) হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরু।প্রতি বছরের মত এই বছরও পবিত্র কাবা ঘরে পরানো হয়েছে স্বর্ণখচিত নতুন গিলাফ। এই গিলাফকে সৌদি ভাষায় বলা হয় কিসওয়া (Kiswah)। ৯ জিলহজ্জ রাতে পবিত্র কাবা ঘরের পুরানো গিলাফটি পরিবর্তন করে নতুন স্বর্ণখচিত গিলাফ পরানো হয়েছে।সৌদি আরবের রীতি অনুযায়ী প্রতি বছরই ৯ জিলহজ্জ এই গিলাফ পরিবর্তনের রেওয়াজ পালন করা হয়। হাজীরা আরাফার ময়দান থেকে ফিরে এই নতুন গিলাফ মুগ্ধ হন।
এবছর গিলাফ পরিবর্তনের কাজে মাসজিদুল হারামের দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক নেতৃত্ব দেন। সেই সময় সৌদি বাদশাহার প্রতিনিধি সহ দেশটির উর্ধতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কাবা শরীফের দরজা ও বাইরের গিলাফ দুটোই মজবুত রেশমী কাপর দিয়ে তৈরি। মূল গিলাফটির মোট ৫টি টুকরো বানানো হয়। ৪টি টুকরো পবিত্র কাবা ঘরের ৪দিকে আর ১টি টুকরো দরজায় লাগানো হয়। টুকরো গুলো পরস্পরের সাথে সেলাইযুক্ত থাকে।
পবিত্র কাবা শরীফের গিলাফের প্রতিটি কাপড়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৬৭০কেজি রেশম, ১৫০কেজি স্বর্ণ ও রুপার চিকন তার। ৪৭থান সিল্কের কাপড় দিয়ে তৈরি হয় এই গিলাফ। যার আয়তন ৫৫৮বর্গমিটার, প্রতিটি থান ১মিটার লম্বা ও ৯৫সেন্টিমাটার চাওড়া যা পরস্পরের সাথে সেলাইযুক্ত থাকে।
প্রতি বছর ১টি সতর্কতামূলক সহ মোট ২টি গিলাফ তৈরি করা হয়। একটি গিলাফ হাতে তৈরি করা হয় যেটি তৈরি করতে সময় লাগে ৮-৯মাস। অন্যটি তৈরি করা হয় মেশিনে যেটি তৈরি করতে ১মাসের মত সময় লাগে। মক্কার একটি শহরে বিশেষ কারখানায় এটি তৈরি করা হয়। পুরাতন গিলাফটি খুলে সেটাকে কেটে বিভিন্ন মুসলিম দেশের সরকার প্রধানদের উপহার হিসেবে দেয়া হয়। এই আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমেই প্রতিবছর পবিত্র হজ্জ পালন করা হয়।
প্রতিবছর একটি সতর্কতামূলকসহ মোট দুটি করে গিলাফ তৈরি করা হয়। হাতে তৈরি করতে সময় লাগে আট থেকে নয় মাস। অন্যটি মেশিনে মাত্র এক মাসে তৈরি করা হয়। মক্কার উম্মুদ জুদ নামক এলাকার বিশেষ কারখানায় এগুলো তৈরি করা হয়।
আরো পড়তে পারেন