বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সিরিজটা না জেতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের মধ্যে একটি করে জিতেছে উভয় দল। তাই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি অঘোষিত ফাইনালে পরিণত হয়েছে। এই ম্যাচে যারাই জিতবে সিরিজ নিশ্চিত তাদেরই হবে। শেষ পর্যন্ত দলগত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ ৫ উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুয়েকে। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেছে সফরকারীরা।
নিয়মিত বোলারদের বেদম মার খাওয়ার মাঝে এসে রান আটকে দেওয়ার পাশাপাশি ২ উইকেট নিয়ে দলকে খেলায় আনেন সৌম্য সরকার। পরে ওপেন করতে নেমে বিশাল রান তাড়ায় খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। শেষ দিকে ঝড় তুলে কাজটা সারলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি।
শুরুতে বোলারদের উদারতায় জিম্বাবুয়ে ১৯৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ায় ম্যাচটা যে জমজমাট হতে যাচ্চে সেটি টের পাওয়া যাচ্ছিল। হলোও তাই। ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৪ বল হাতে রেখে।
অবশ্য দুই ওপেনারে শুরুটা খারাপ ছিল না। সৌম্য সরকার কিছুটা মেরে খেলার চেষ্টায় ছিলেন। তৃতীয় ওভারে মুজারাবানির বলে নাঈম হাত খুলতে গিয়ে তালুবন্দি হন মিডঅফে। ৭ বলে নাঈম ফেরেন ৩ রান করে। এর পর সৌম্য-সাকিব মিলে পাওয়ার প্লেতে রানের চাকা সচল রেখেছেন।
এর পর সাকিব মেরে খেলতে থাকেন বেশ কিছুক্ষণ। এই মেরে খেলতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন অষ্টম ওভারে। এই ওভারে লুক জংউইর বলে দুটি ছক্কা মারলেও চতুর্থ বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন বদলি ফিল্ডার মুসাকান্দাকে। সাকিবের ১৩ বলের ইনিংসে ছিল ১টি চার ও দুটি ছয়।
এর পর সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ মিলেই এগিয়ে নেন দলকে। সৌম্য ফিফটি তুলে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে পৌঁছানোর পর ভেঙে যায় ৬৩ রানের এই জুটি। যা গড়ে দেয় জয়ের ভিত। সৌম্য ফেরেন ৬৮ রানে। তার ৪৯ বলের ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও ১টি ছয়।

আফিফ নামার পর স্কোরবোর্ড দ্রুত সমৃদ্ধ করতে সচেষ্ট ছিলেন। ৫ বলে ১৪ রান করেই বোল্ড হয়ে ফিরেছেন মাসাকাদজার স্পিনে। তখন ভীষণ চাপেই পড়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। রানরেটের চাপ ছিল তখন। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেছেন মূলত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও শামীম। দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে মাহমুদউল্লাহ ২৮ বলে ফিরে যান ৩৪ রানে। এই ঘুরে দাঁড়ানো পরিস্থিতিতে শামীমের অবদানও কম নয়। ১৫ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন বাংলাদেশ। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চারের মার।
এর আগে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বোলিংয়ের ওপর ছঁড়ি ঘোরায় জিম্বাবুয়ে। তাতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটিও হয়ে উঠে জমজমাট। বাংলাদেশের সিরিজ জয় করতে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ১৯৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিকরা। টস জিতে ব্যাট করে ৫ উইকেটে তারা সংগ্রহ করে ১৯৩!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ (মারুমানি , মাধভেরে ৫৪, চাকাভা ৪৮ , রাজা ০, মেয়ার্স ২৩ , বার্ল ৩১* , জঙ্গুই ১* ; তাসকিন ০/২৮, সাইফুদ্দিন ১/৫০, শরিফুল ১/২৭, সাকিব ১/২৪ , নাসুম ০/৩৭, সৌম্য ২/১৯)
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ১৯৪/৪ (নাঈম ৩, সৌম্য ৬৮ , সাকিব ২৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৪ , আফিফ ১৪, শামীম ৩১*, সোহান ১* ; রাজা ০/১৩, চাতারা ০/২৭, মুজারাবানি ২/২৭, মেয়ার্স ০/৪২, জঙ্গুই ৩/৪২, ওয়েলিংটন ১/৩৬ )
ফল: বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সৌম্য সরকার।
সিরিজ: বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
আরো পড়ুন,
মীরাবাঈ চানু আর তার অলিম্পিক পদকজয়ের গল্প
অলিম্পিকে আর্চারি ইভেন্টের শেষ ষোল’তে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের শততম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে দাপুটে জয়