সহজ টার্গেট। তারপরও কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল ঠিকই। ওভারপ্রতি সাড়ে পাঁচ করে রান লাগলেও একবার সেই রিকুয়ার্ড রেটটা উঠেছিল ছয়ের উপরে। তবে সকল শঙ্কাকে একপাশে রেখে ঠিকই কাঙ্খিত জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। লক্ষ্যটা যে ছিল মাত্র ৯৪! নাইম শেখ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কার্যকরী দু্ই ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থটিতে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর তাতেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতে নিল টাইগাররা।
এই জয়ে আরেকটা সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো মাহমুদউল্লাহর দলের। সব মিলিয়ে টানা ষষ্ঠ সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর জিম্বাবুয়েতে গিয়ে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। তারপর দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারায় ৪-১। তারপর চলতি নিউজিল্যান্ড সিরিজও জিতে নিল বাংলাদেশ।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সিরিজের চতুথ টি টুয়েন্টি ম্যাচটি জিততে ৯৪ রান লাগত বাংলাদেশের। টার্গেট সহজ হলেও সহজ জয় কিন্তু পায়নি স্বাগতিকরা। দলীয় ৮ রানের মাথায় ৬ রান করে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস। তারপর নাইম শেখকে নিয়ে এগুতে থাকা সাকিব আল হাসান হঠাৎ-ই পথ হারান। এজাজ প্যাটেলকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে হাঁকাতে গিয়ে মিস করে স্ট্যাম্পিং সাকিব (৮)। এর তিন বল পরই মুশফিকুর রহিম শূন্য রানে ফিরলে চাপ বাড়ে বাংলাদেশের।
অপর ওপেনার নাইম শেখ উইকেট বাঁচিয়ে খেলছিলেন। তবে অপর প্রান্তের বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারছিলেন না মাহমুদউল্লাহ। চতুর্থ উইকেটে দুজন ৩৪ রান তুললেও বল খেয়েছেন ৫০টি। ফলে দলীয় ৬৭ রানের মাথায় নাইম ৩৫ বলে ২৯ রান করে ফিরলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহই অবশ্য সেই চাপ থেকে দলকে টেনে তুলেছেন।
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ৪৩ রানের ইনিংস খেলে পাঁচ বল হাতে রেখেই বাংলাদেশকে ছয় উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন টাইগারদের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। ১৯.১ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ৯৬ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৪৩ রান করতে খেলেছেন ৪৮ বল। চার মেরেছেন ১টি, ছ্ক্কা দুটি। নিউজিল্যান্ডের হয়ে এজাজ প্যাটেল ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচায় নিয়েছেন দুই উইকেট।
এর আগে নাসুম আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে ৯৩ রানেই বেঁধে রেখেছে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে কিউই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে সাইফউদ্দিনের ক্যাচ বানান নাসুম আহমেদ। তৃতীয় ওভারে দারুণ খেলতে থাকা ফিন অ্যালেনকেও ফেরান নাসুম। বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ হয়েছেন ৮ বলে ১২ রান করে। এরপর শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে তুলতে লড়েছেন অধিনায়ক টম লাথাম ও উইল ইয়ং। দুজন দলকে অনেকটা এগিয়ে নিয়েছেনও বটে। তবে দলীয় ৫২ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২১ রানের মাথায় লাথাম শেখ মেহেদি হাসানের শিকার হলে পরে আর দাঁড়াতে পারেননি কিউইরা।
এক প্রান্তে উইল ইয়ং অপরাজিত ছিলেন অনেকক্ষণ। তবে অন্যপ্রান্ত থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফউদ্দিন, নাসুমরা। শেষ দিকে মোস্তাফিজকে সামলাতে পারল না বলেই একশর আগে গুটিয়ে যেতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে।
১৯.৩ ওভারে ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। এই ৯৩ রানের ৪৬ রানই এসেছে ইয়ংয়ের ব্যাট থেকে। ৪৮ বল খেলে ৫টি চার ১টি ছয়ে এই রান করেছেন কিউই তরুণ।
বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ৩.৩ ওভারে ১২ রান খরচায় নিয়েছেন চার উইকেট। নাসুম আহমেদ ৪ ওভারে ১০ রান খরচায় নিয়েছেন দুই উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও মেহেদি হাসান।
আরো পড়তে পারেন
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের দল ঘোষণা