আজ ৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ক্যান্সার দিবস।
বিশ্ব জুড়ে প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস হিসাবে পালিত হয়। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়। বিশ্ব জুড়ে ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা ও শিক্ষা প্রসারিত করা এই দিবসের মুখ্য উদ্দেশ্য।
‘আমি পারি, আমি পারব’
শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি সারাদেশে পালিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসী বিভাগ দিবসটি পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করে। এই উপলক্ষে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবন চত্বরে সকাল ১০:৩০ মিনিটে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া।
ফার্মেসী বিভাগের সভাপতি প্রফেসর আশিক মোসাদ্দিকের সঞ্চালনায় এই আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিভাগের প্রফেসর মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর প্রভাষ কুমার কর্মকার, আইসিটি সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর মো. বাবুল ইসলামসহ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা অংশগ্রহণ করে।
উপ-উপাচার্যদ্বয় অনুষ্ঠানে ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা বলেন, ক্যান্সার এটি দূরারোগ্য মরণ ব্যাধি। বর্তমানে বাংলাদেশে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগির সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ। দেশে প্রতিবছর প্রায় ২.৫ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ১.৫ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে মুত্যৃবরণ করে। এই ব্যাধি নির্মূলে কার্যকর কোন প্রতিশেধক না থাকায় সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এই ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে বলেও তাঁরা উল্লেখ করেন।
এছাড়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্যান্সার সচেতনতামূলক লিফলেটও বিলি করা হয়। এরপর একটি র্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
ক্যান্সার কি? ক্যান্সার হল এক সমষ্টিগত রোগের একটি সাধারণ নাম, যেখানে শরীরের কিছু কোষ বিভিন্ন কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। অপরিশোধিত ক্যান্সার পার্শ্ববর্তী স্বাভাবিক কলার মধ্যে কিংবা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এরফলে সাংঘাতিক অসুস্থতা, প্রতিবন্ধকতা, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
- কারণ: বহু কারণে ক্যান্সার হতে পারে (শুধুমাত্র একটি কারণেই কোনও মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন না)
- শারীরিক কার্সিনোজেনস(ক্যান্সার উৎপাদক), যেমন অতিবেগুনি এবং আয়নাইজিং বিকিরণ
- রাসায়নিক কার্সিনোজেনস(ক্যান্সার উৎপাদক), যেমন অ্যাসবেস্টস, তামাক, এফ্লাটক্সিন (খাদ্য দূষণকারী), এবং আর্সেনিক(একটি পানীয় জল দূষক)
- জৈবিক কার্সিনোজেনস(ক্যান্সার উৎপাদক), যেমন নির্দিষ্ট ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী যেমন হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস এবং হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস(এইচপিভি) থেকে সংক্রমণ
- ক্যান্সারের জন্য এজিং বা পক্কতা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ
- তামাক ব্যবহার, অ্যালকোহল ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, এবং শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা ক্যান্সারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
- কিছু তথ্য-
- বিশ্ব জুড়ে প্রতি বছর ৯.৬ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারের কারণে মারা যায় এবং এর সঠিক প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে ২০৩০ সালের মধ্যে সংখ্যাটি দ্বিগুণে পরিণত হবে।
- পৃথিবীতে যত সংখ্যক মানুষের ক্যান্সার হয়, তাঁর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ প্রতিরোধ করা সক্ষম।
- সারা বিশ্ব জুড়ে মৃত্যুর কারণ হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ক্যান্সার।
- ৭১ শতাংশ ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুতে দায়ী থাকে তামাক, এমনকি ২২ শতাংশ অন্য ক্যান্সারেও আক্রান্তের সঙ্গেও যুক্ত থাকে তামাক।
- পুরুষেরা সবচেয়ে বেশি ফুসফুস, প্রস্টেট, কোলরেকটাল, পাকস্থলী, যকৃৎ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, আর মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত স্তন, কোলরেকটাল, ফুসফুস, সারভিকাল এবং থাইরয়েড ক্যান্সার।