২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা,ধর্ষণ ও সেনা বাহিনী দ্বারা সাম্প্রদায়িক নিধন চালানোর অপরাধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার পক্ষে গত ১১ নভেম্বর,২০১৯ আর্ন্তজাতিক বিচার আদালতে(আইসিজে) মামলা করে। গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবু বকর তামবাদু।অপরদিকে মিয়ানমারের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি।
যার ফলশ্রুতিতে গত ২৩ জানুয়ারি রোহিঙ্গাদের গণহত্যার থেকে সুরক্ষার জন্য আর্ন্তজাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এর ১৭জন বিচারক সর্বসম্মতভাবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আপিলহীন চার দফা অর্ন্তবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।বিবিসি অনলাইন প্রতিবেদনের সাহায্যে জানা যায়,মিয়ানমার আর্ন্তজাতিক বিচার আদালতের(আইসিজে) আদেশ প্রত্যাখান করেছে এবং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
মিয়ানমার সরকারের বিবৃতি অনুসারে,”আর্ন্তজাতিক বিচার আদালতের এই আদেশ প্রকৃত রোহিঙ্গা পরিস্থিতির বিকৃত চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে এবং তাদের গঠিত ইনডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারি (আইসিওই) রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর কোনো ধরনের গণহত্যার আলামত খুঁজে পায়নি।তবে সেখানে যুদ্ধপরাধ হয়েছে,যা তদন্ত করা হচ্ছে এবং মিয়ানমারের বিচার ব্যবস্থায় এর বিচার হবে।”
প্রকৃতপক্ষে আইসিওই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ও মিয়ানমার সরকারের ঘনিষ্ঠ কমিশন।
মিয়ানমার সরকার বিবৃতিতে আরো বলেন,”মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নিন্দার কারণে মিয়ানমারে সাথে বিভিন্ন দেশের দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক নষ্ট হচ্ছে এবং যার ফলে মিয়ানমারের বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের উন্নতি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।”
বিচারক অভিযোগ করে বলেন, মামলায় আদালতকে যথাযথ সহযোগিতা করেনি মিয়ানমার। এসময় মামলা বাতিলের জন্য মিয়ানমার যে আবেদন করেছে সেটিও খারিজ করে দেন বিচারক। বিচারক আব্দুল কাওয়াই আহমেদ ইউসুফ স্পষ্ট জানান, এই মামলা নিয়ে মিয়ানমার যে আপত্তি করেছে সেটি গহণযোগ্য নয়।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা, ধর্ষণ ও নির্যাতন চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ওই ঘটনাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। এ মামলার ওপর গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়।