রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঐতিহাসিক রায় দিলো আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। নির্যাতিত এই জনগোষ্ঠির সুরক্ষায় চারটি অন্তর্বর্তী আদেশও দিয়েছে আইসিজে। গাম্বিয়ার করা মামলায় বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয় হেগের আদালত।
এই রায়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মিয়ানমারকে। এছাড়াও সংরক্ষণ করতে হবে রাখাইনে সংঘটিত অপরাধের আলামত। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে ৪ মাস পর প্রতিবেদনও জমা দিতে হবে।
২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের বর্বরতা নাড়া দিয়েছিলো সাড়া বিশ্বকে। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসলেও বিচার হয়নি সেই বর্বরতার। ২৩ জানুয়ারী নেদারল্যান্ডের হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে সুগম হলো ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ। প্রাথমিক আদেশে উক্ত আদালত রাখাইনে গণহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আইসিজের প্রধান বিচারপতি আবদুল কোয়াই আহমেদ ইউসুফ বলেন, “এখনও ৬ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইনে আছে। তারা মারাত্মক গণহত্যার ঝুঁকিতে আছে। মিয়ানমার এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি যাতে হত্যা, ধর্ষণের মতো নিপীড়ন ধেকে রক্ষা পাবে রোহিঙ্গারা। এজন্য পূর্ণাঙ্গ বিচার শেষ হওয়ার আগে অন্তর্বতী আদেশ দিচ্ছে এ আদালত। “
আইসিজে’র ৪ অন্তর্বতী আদেশঃ
১. রোহিঙ্গাদের গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা |
২. সেনাবাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীকে গণহত্যা থেকে বিরত রাখা |
৩. গণহত্যার আলামত নষ্ট না করা |
৪. ৪ মাসের মধ্যে আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন দাখিল। মামলা নিশ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ৬ মাস পর পর প্রতিবেদন দিতে হবে। |
আইন অনুসারে এসব আদেশ মানতে বাধ্য মিয়ানমার। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এ রায়কে মিয়ানমারের জন্য বড় পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। শুনানিতে দেশটির নেত্রী অং সান সুচি নিজে উপস্থিত থেকে সেনাবাহিনীর সাফাই গান। তিনি গাম্বিয়ার মামলার যৌক্তিকতা এবং আইসিজে’র এখতিয়ার নিয়ে। বৃহস্পতিবার সে আপত্তি নাকচ করে দেন আদালত।