অতিমাত্রায় শব্দদূষণ রাজধানীর জীবনযাত্রাকে যেমন বিঘ্ন করছে, তেমনি অসুস্থ করে তুলছে সাধারণ মানুকে। এই দূষণ শুধু রাজধানীতে নয়, সারাদেশেই হচ্ছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় দূষণ প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে একদিন শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
শব্দদূষণ রোধে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে এবং শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছাতে এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কর্মসূচি সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের শিগগিরই তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেবে মাউশি।
সপ্তাহে একদিন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কের ফুটপাথে দাঁড়াবে শিক্ষার্থীরা। ব্যানার ও ফেস্টুনে শব্দদূষণ রোধে সচেতনতামূলক বিভিন্ন বার্তা থাকবে। আর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তারা শুধু দাঁড়িয়েই কর্মসূচি পালন করবে তা নয়, শব্দদূষণ না করার জন্য মানুষের কাছে শিক্ষার্থীরা আহ্বান জানাবে বলে মাউশি সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘কাগজে-কলমে লেখাপড়ার বাইরে শিক্ষার্থীদের ৭টি সফট স্কিল শেখানোর কাজ চলছে। এর আওতায় শিক্ষার্থীদের শব্দদূষণ বিষয়ে সচেতন করতে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টি নিজেরা জানবে এবং একইসঙ্গে মানুষকেও সচেতন করবে।’ গোলাম ফারুক আরও বলেন, ‘সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে শব্দদূষণ নিয়ে অধ্যায় রয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতেও রয়েছে। তবে এই কর্মসূচি লেখাপড়ার বাইরে। এই কার্যক্রম দীর্ঘদিন পর্যন্ত চলবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, মানুষের শব্দ গ্রহণের স্বাভাবিক মাত্রা ৪০ থেকে ৫০ ডেসিবল। পরিবেশ অধিদফতরের গত বছরের জরিপে দেখা যায় দেশের বিভাগীয় শহরগুলোয় শব্দের মাত্রা ১৩০ ডেসিবল ছাড়িয়ে গেছে। যা স্বাভাবিক মাত্রার চাইতেও প্রায় তিনগুণ বেশি। মাত্রাতিরিক্ত শব্দের কারণে ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ১২ শতাংশ মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে বলে পরিবেশ অধিদফতরের সাম্প্রতিক জরিপে উঠে আসে। সেইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ, ফুসফুসজনিত জটিলতা, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্মরণশক্তি হ্রাস, মানসিক চাপসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।