জিম্বাবুয়ের সাথে শেষ ১৮ ম্যাচ অপরাজেয় ছিল বাংলাদেশ। সে ধারা অবশ্য ঠিক ধরে রাখলো টিম টাইগার্স। তবে জয় আসলো অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে। সাকিব তরীতে ভর করে বাংলাদেশের জয় ৩ উইকেটের ব্যবধানে।
প্রথম ওয়ানডের ধাক্কা সামলে এ দিন ভালোমতোই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ওয়েসলে মাদেভেরের ফিফটির পর লড়াই করার মতো একটা সংগ্রহ পেয়েছিল তারা। অবশ্য তামিম দুর্দান্ত ওই ক্যাচ না নিলে জিম্বাবুয়ের রান আরও বেশি হতেই পারত। টসে জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই তাসকিন তুলে নিয়েছিলেন কামুনখোয়ামুকে। এরপর মারুমানি আউট হয়েছেন মিরাজের বলে। চাকাভা ভালো করছিলেন, কিন্তু তিনি বোল্ড হয়ে যান সাকিবের বলে। এরপর টেলরের আউটের মাধ্যমে দৃশ্যপটে শরিফুল। দলের পক্ষে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। জিম্বাবুয়ের ইনিংস শেষ হয়েছিল ২৪০ রানে।
বল হাতে পারফর্ম করছেন নিয়মিতই, আগের ম্যাচেও নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। তবে ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসানকে যেন ঠিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বহুদিন পর সেই সাকিবকে পাওয়া গেল হারারেতে। দলের বিপদে বাকিদের আসা যাওয়ার মিছিলে চওড়া হলো তার ব্যাট। সাইফ উদ্দিনকে নিয়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন। ৩ উইকেটের জিয়ে তাই সিরিজও নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
২০১৯ বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যান সাকিব প্রায় অতিমানব হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর রান পেলেও ঠিক ধারাবাহিক ছিলেন না, আবার তিন অংকের দেখাও পাননি। আজ সেঞ্চুরিটা ৪ রানের জন্য পাওয়া হয়নি, তবে সেটা নিয়ে সাকিবের খুব একটা আফসোস থাকার কথা নয়। তিন নম্বরে নেমে খেলাটা শেষ করে এসেছেন, বিশেষ করে দলের বিপর্যয়ের সময়ে, সেটা বাড়তি তৃপ্তি দেবে সাকিবকে। তামিমের আউটের পর যখন নেমেছিলেন, বাংলাদেশের সামনে ২৪০ রান খুব বড় মনে হচ্ছিল না।
কিন্তু ব্যাটসম্যানদের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার প্রতিযোগিতায় দ্রুতই একা হয়ে গেলেন সাকিব। লিটন গেলেন, মিঠুন আরও একবার দেখালেন কেন তার ওপর ভরসা করা কঠিন। মোসাদ্দেক সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না আরও একবার। মাহমুদউল্লাহ এসে হাল ধরলেন সাকিবের সাথে। ৭৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে এলো ৫৫ রান। কিন্তু মাহমুদউল্লাহও কাট করতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এলেন, আরও বিপদে বাংলাদেশ।
মিরাজের সামনে সুযোগ ছিল ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে আরেকটু প্রমাণ করার। উঠে এসেছিলেন সাতে। কিন্তু সুযোগটা হারালেন। আফিফও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না, ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এলেন। ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রানে তখন কাঁপছে বাংলাদেশ।
সাইফ উদ্দিন আর সাকিব এরপর ভুল করলেন না। তেমন কোনো বড় শট না খেলেই দুজন সিঙ্গেলস আর ডাবলস নিয়ে এগিয়ে গেলেন। এর মধ্যে অবশ্য দুজনেই হাফ চান্স দিয়েছেন। কঠিন ক্যাচ রাখতে পারেননি চাকাভা, রান আউটের সুযোগও মিস হয়েছে। সাকিব ৫০ পেয়েছিলেন ৫৯ বলেই। সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও ছিল। তবে সেটা হয়নি। তারপরও ২০১৯ বিশ্বকাপের পর এটাই সাকিবের সর্বোচ্চ স্কোর। তবে এই ৯৬ রানেই অনেক সেঞ্চুরির চেয়েও বেশি তৃপ্তি পাওয়ার কথা তার।
এমন ৯৬ রানের ইনিংসে আবার একটা অদ্ভুত রেকর্ডই গড়ে ফেললেন সাকিব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার চেয়ে বেশি ৯৬ রানের ইনিংস খেলেননি কেউ। আবার এ দিনে পূরণ করেছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের ১২০০০ তম রান। এ জয়ে আইসিসি সুপার লিগে নিজেদের জায়গা আরো পাকাপোক্ত করল বাংলাদেশ। পয়েন্ট বাংলাদেশের অবস্থান এখন দুইয়ে।
আরো পড়তে পারেন
শুভ জন্মদিন ‘ফাদার অফ ক্রিকেট’ ডব্লিউ জি গ্রেস
সাকিব-লিটনে বাংলাদেশের রেকর্ড গড়া জয়