আগামীকাল সাধারন ছুটি শেষে ৩১ মে থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের মার্কেট, বিপণি বিতান ও দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, এ বিষয়ে নজরদারি করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন ও মহাসচিব জহিরুল হক ভূঁইয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে অবহিত করা হয়েছে, ৩০ মের পর থেকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি আর বাড়ানো হবে না। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকাসহ সারা দেশে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে দোকানপাট খোলা যাবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও মানুষের জীবিকার তাগিদে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যেই রমজান মাসে মার্কেট ও দোকান খোলা রেখে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ট্রেনিং সম্পন্ন করেছি। যদিও তা সত্ত্বেও শতভাগ দোকান মালিক, কর্মচারি ও ক্রেতাসাধারণকে মাস্ক পরানো সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, শুধুমাত্র মাস্ক ব্যবহার করলে করোনা সংক্রমণ ৮০ শতাংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
মালিক সমিতির বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়, ‘সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা শহরের দোকান মালিক সমিতি ও মার্কেট কমিটিকে অনুরোধ করা যাচ্ছে, শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে, বিশেষ করে মাস্ক না পরা ও যথাযথ শারীরিক দূরত্ব মানা না হলে ৫০০ টাকা করে জরিমানা এবং কেউ হাঁচি, কাশি, জ্বর নিয়ে লোকালয়ে গেলে ১ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা যেতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আগে জীবন পরে জীবিকা।’
প্রসঙ্গত, মহামারি করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে দুই মাসের অধিক সময় যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচলে বিধিনিষেধের পর আগামী ১ জুন থেকে সীমিত পরিসরে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। তবে আন্তর্জাতিক রুটগুলোতে নিয়মিত যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচলে বিধিনিষেধের মেয়াদ ১৫ জুন পর্যন্ত বৃদ্বি করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বৃহস্পতিবার বলেন, “১ জুন থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, সৈয়দপুর রুটে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলবে।”
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান মো. মফিদুর রহমান বলেন, “আপাতত সবগুলো অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করছি না। যেহেতু সব এয়ারপোর্ট পুরোপুরি এখনই প্রস্তুত না, ঢাকার বাইরে তিনটা এয়ারপোর্ট আপাতত প্রস্তুত রয়েছে। সেই এয়ারপোর্টগুলোতে আপাতত যাবে, আর এক সপ্তাহের মধ্যে যদি প্রস্তুতি শেষ হয়, তাহলে বাকি এয়ারপোর্টগুলোতে ফ্লাইট অপারেশন চালু করা যাবে।”
তিনি বলেন, “এখন অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সগুলোকে স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব ও পরিচ্ছন্নতার বিধি তাদের মেনে চলতে হবে। প্রথমত যাত্রীদের অবহিত করতে হবে কোন ধরনের যাত্রী তাদের এয়ারক্রাফটে যাতায়াত করতে পারবে। দ্বিতীয়ত তারা এয়ারক্রাফটের যাত্রী ধারণক্ষমতার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশের বেশি যাত্রী নিতে পারবে না। আসা যাওয়ার আগে এয়ারক্রাফট স্যানিটাইজ করতে হবে। যাত্রীদের মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস দিতে হবে। যাত্রীদের বসার ক্ষেত্রে দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।”
এছাড়াও সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস চালুর পাশাপাশি ৩১ মে থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচলেরও অনুমতি দিয়েছে সরকার।