সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা থেকে সরে দাঁড়ালো বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা মানসম্পন্ন ও আইনসম্মত বলে মনে করায় তাদের এই সিদ্ধতের কারণ।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) আমির হোসেন জানান, “দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে ইউজিসির কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার ধারণাটি ‘জটিল’ ও ‘অস্পষ্ট’ হওয়ায় এতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্বকীয়তাবিরোধী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতাবিরোধী এবং ভবিষ্যতের জন্য অকল্যাণকর বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল।” আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে গত বুধবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), পরদিন বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও ইউজিসির কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
কিন্তু এরপরও দেশের ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়েই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। তবে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৯। এগুলোতে প্রথম বর্ষে ভর্তির আসন রয়েছে প্রায় ৬০ হাজার। এর বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষা দেন কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও আর্থিক খরচ কমাতে সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এ বছর থেকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় ইউজিসি।
ইউজিসির প্রত্যাশা করে যে, জনকল্যাণে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে আসবে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। আস্থা অর্জন করা গেলে পরবর্তীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও চালু করা হবে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা।
বুয়েট, ঢাবি, রাবি, জাবি ও চবি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাবে না বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বিগত বছরগুলোর মত করেই পরীক্ষা নেবে। সে কারণে এ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার উদ্দেশ্য পূরণ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বাকি ৩৯ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেবার ব্যাপারে সমর্থন দিয়েছে।
উল্লেখ্য, নতুন পদ্ধতিতে কলাম বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য তিনটি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু শুরু থেকেই এ নিয়ে অনাগ্রহ দেখিয়ে আসছিল বুয়েট এবং ৭৩-এর আদেশে চলা স্বায়ত্তশাসিত চার বিশ্ববিদ্যালয়। সবশেষে স্বায়ত্তশাসিত চার বিশ্ববিদ্যালয়ই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তের কথা জানাল। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় বাধ্য করতে পারছে না ইউজিসি।
আগামী কাল, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে ইউজিসি থেকে। তবে ধারণা করা হচ্ছে ৩৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু হতে পারে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা। আবার এটাও ধারণা করা যায় যে, এই পদ্ধতি সফল হলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা চালু হতে পারে।