অবশেষে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা থেকে সরে দাঁড়ালো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন(ইউজিসি)।বুধবার(২৬ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্যদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা জানান ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ।সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার পরিবর্তে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি।
পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না আসায় আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে চারটি পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইউজিসি।নতুন পদ্ধতিতে অনলাইনে আবেদনের পর পরীক্ষার্থীদের ছয়টি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চারটি গুচ্ছে ভাগ করে এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি গুচ্ছে নেওয়া হয়েছে, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি গুচ্ছ,কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি গুচ্ছ এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আরেকটি গুচ্ছ করে এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইউজিসি।
তবে ১৯৭৩ এর আদেশে চলা চার বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) আগেই জানিয়েছে তারা ইউজিসির কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না।
বর্তমানে দেশে ৪৬ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চালু রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯টিতে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ছাত্র ভর্তি করা হচ্ছে। এগুলোতে আসন আছে প্রায় ৬০ হাজার। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে প্রথমে গুচ্ছ ভিত্তিতেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউজিসি। কিন্তু হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইউজিসি। যেখানে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্যে আলাদা তিনটি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর কথা ছিল। কিন্তু পরে এটি নিয়ে দ্বিমত দেখা দেয়। অনেকে বলে আসছিলেন, গুচ্ছ ভিত্তি ভালো পদ্ধতি। কারণ এটি একটি প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি। মেডিকেল কলেজ গুলোতে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়। এমনকি গত বছর সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এমন অবস্থায় আজকের সভায় আবারও গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য তিনটি পরীক্ষা (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখা) হবে। আর বাকি গুচ্ছগুলোতে একটি করে পরীক্ষা হবে। অর্থাৎ সর্বমোট ছয়টি পরীক্ষা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই পরীক্ষার মাধ্যমেই একজন শিক্ষার্থী বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ পাবে। অর্থাৎ বিজ্ঞানের একজন শিক্ষার্থী চাইলে মানবিকের কোনো বিষয়েও ভর্তির সুযোগ পাবে। সে ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে এ ধরনের কোনো একটি ব্যবস্থা রাখা হবে।আগামী মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে এই ভর্তি পরীক্ষার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে।
এ বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে তারা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে না। এরপর আমরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরমধ্যে একটা হয়ে গেছে। এছাড়া একটা হবে সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, একটা হবে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং একটা হবে জেনারেল বিশ্ববিদ্যালয়।