নতুন প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দুই তরুন গবেষক। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হাসান আল রাজি চয়নের নেতৃত্ব উক্ত গবেষনা কার্যে সহায়তা করেছেন একই বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মার্জান মারিয়া। পুরো গবেষণা কাজটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাবির বিন মোজাফফর।
গবেষণার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা কালে মার্জান মারিয়া শ্যাডো নিউজকে বলেন, ‘আমরা এই ব্যাঙ আবিষ্কারের আগে একটা ব্যাঙ পেয়েছিলাম, যেটা চীনে পাওয়া যায়। এটা বাংলাদেশে আমরাই প্রথম খুজে পাই।”

“তখন থেকেই আমাদের টিমের এই উভচর প্রাণী নিয়ে আগ্রহ বেড়ে যায়। এবং বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে আমরা একটা জরিপ শুরু করি। সেই কাজ করার সময়ই এই ব্যাঙটি আমাদের কাছে অপরিচিত মনে হয়। তারপর তা নিয়ে আমার গবেষণা শুরু করি। ইতিমধ্যেই আমেরিকার Zookeys journal এই ব্যাঙ আবিষ্কার সম্পর্কিত গবেষণাপত্রটিকে গ্রহন করেছে এবং শীগ্রই তাদের জার্নালে তারা এটা প্রকাশ করবেন।” – বলছিলেন মারজান মারিয়া।
তারা গত বছর ২০১৯ সালের এপ্রিল-মে মাসে মৌলভীবাজার জেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও আদমপুর সংরক্ষিত বন থেকে ১৮-২২ মিলিমিটার আকৃতির ছোট কিছু ব্যাঙ সংগ্রহ করেন। ব্যাঙটির শারিরীক গঠন, ডিএনএ সহ নানান পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেখা যায় ব্যাঙটি Raorchestes (রোয়ারচেস্টেস) গণের এর একটি ব্যাঙ যেটি আগে আবিষ্কার করা হয়নি।

ব্যাঙটির আবিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাণী গবেষক হাসান আল রাজি চয়ন বলেন, “ব্যাঙটি সংগ্রহের পর আমরা নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছি এই ব্যাঙটি সম্পর্কে আগে কোন তথ্য কোথাও প্রকাশ হয়নি।” ব্যাঙটির নামকরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “Rhacophoridae গোত্রের এই ব্যাঙটির বৈজ্ঞানিক নামকরন করা হয়েছে বাংলাদেশের বিখ্যাত প্রাণীবিজ্ঞানী ড.আলী রেজা খানের নাম অনুসারে Raorchestes rezakhani (‘রোয়ারচেস্টেস রেজাখানি’)।”

তরুন গবেষক হাসান আল রাজি চয়ন ও মার্জান মারিয়া উভয়েই রংপুরের সন্তান। হাসান আল রাজি রংপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ও মার্জান মারিয়া ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে পড়াশুনা করেছেন।প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা পেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের গবেষণা অব্যাহত থাকবে বলে জানান, এই তরুন গবেষক।