” সূর্য উঠেছে দেখো ওই পূর্ব দিগন্তে
রক্তে রাঙানো কতো আবিরে
একুশ এসেছে ভাই চলো যাই
ফুল দিতে তাদের স্মৃতি স্মরণে,
এই বাংলাকে ভালোবেসে যারা দিয়ে
গেছে প্রাণ এই বাংলাদেশ আমার
তাদের অবদান,সকল শহীদকে
জানাই আমার হাজার সালাম “
আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। শুক্রবার দিবসের প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপাচার্য এম আবদুস সোবহানের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, অনুষদ অধিকর্তা,রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সেস এর সম্মানিত পরিচালক প্রফেসর এ এফ এম আলী হায়দার স্যার ও ড. হাফিজুর রহমান স্যার এবং অন্যান্য ইনস্টিটিউটসমূহের পরিচালক ও হলসমূহের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ।

উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পর রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিব ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল কাদের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে রাবি ছাত্রলীগ, রিপোর্টার্স ইউনিটি, প্রেসক্লাব, সাংবাদিক সমিতি, পেশাজীবী সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনগুলো পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছিল ভাষার অধিকার, একুশের প্রথম প্রহর থেকে সেই সব শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

‘একুশ মানে মাথা নত না করা’ এই প্রত্যয় নিয়ে ও সকল ভাষা শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য সংগঠন।
ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়। সকাল ৭টা থেকে বিভিন্ন আবাসিক হল ও বিভাগ, পেশাজীবী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান, রাবি শিক্ষক সমিতি, রাবি স্কুল ও শেখ রাসেল মডেল স্কুল প্রভাত ফেরিসহ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। মহিলা ক্লাবের সভানেত্রী উপাচার্য পত্নী মনোয়ারা সোবহানের নেতৃত্বে উপ-উপাচার্য পত্নী রমা পোদ্দার ও উপ-উপাচার্য পত্নী শরিফা জাকারিয়াসহ ক্লাবের সদস্যবৃন্দ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ।

সকাল ১০টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন চত্বরে চিত্রাংকন ও বাংলা হস্তলিপি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও পুরস্কার প্রদান করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। বাদ জুম্মা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় কোরআনখানি ও মোনাজাত।
দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকাল সাড়ে ৮টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের পশ্চিম চত্বরে রাবি অফিসার সমিতির কার্যালয়ে আলোচনা সভা। এছাড়াও সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ নিজ কার্যালয়ে সহায়ক কর্মচারী সমিতি, পরিবহন টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতি ও সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়নের এবং কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাবি ইউনিট কমান্ডের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা এবং কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন আবৃত্তি ও মঞ্চ নাটকের আয়োজন করছে। এদিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা রাখা হয়েছে।