বাতাস থেকে খাবার পানি মিলবে – এই ধারণা নিয়ে কাজ করছে বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। তাদেরই একটি হলো মার্কিন প্রতিষ্ঠান “জিরো মাস ওয়াটার”। প্রতিষ্ঠানটির তৈরী হাইড্রোপ্যানেল বাতাসের জলীয় বাষ্প থেকে প্রতিদিন তৈরী করতে পারবে প্রায় ১০ লিটার বিশুদ্ধ খাবার পানি। পাশাপাশি বাড়ির ছাদে বসানোর উপযোগী ছোটো আকারের প্যানেল তৈরীর কাজ শুরু করেছে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি।
প্যানেলটিকে প্রথম দেখায় মনে হবে সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্যানেল। কিন্তু বিদ্যুৎ নয় বরং পাওয়া যাবে পানি। এটি তৈরীকারী প্রতিষ্ঠান এর নাম রেখেছে “সোর্স”। সৌরশক্তিচালিত এ প্যানেলটিতে রয়েছে পানি গ্রহণকারী উপাদান, যা বাতাসের জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে। প্যানেলের ভেতরের বাতাস সৌরশক্তিতে গরম হয় এবং ঘূর্ণন তৈরী করে, যা উক্ত বাষ্পকে পানিতে রূপান্তিত করে। এরকম একটি প্যানেল থেকে উৎপাদিত পানি সংরক্ষণ করা হয় ৬০ লিটারের একটি জলাধারে।
জিরো মাস ওয়াটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কোডি ফ্রাইসেন এ বিষয়ে বলেন, “সোর্স হাইড্রোপ্যানেলে আমরা সূর্যের আলো এবং বাতাস থেকে বিশুদ্ধ পানি তৈরী করি। পরে এটাতে খনিজ পদার্থ যোগ করে সংগ্রহ করা হয়। এরপর বাড়িতে স্কুলে বা কোনো কমিউনিটিতে প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা পানি সরবরাহ করে থাকি। সোর্সের সবচাইতে ভালো দিক হলো এটি বিশ্বেরপানি সমস্যার কার্যকর এবং বৈশ্বিক সমাধান দিতে পারবে। ঐতিহাসিকভাবে যেসব স্থানে পানির সমস্যা রয়েছে সেসব স্থানে এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ রাখবে।”
প্রতিদিন ১০ লিটার পানি উৎপাদনে সক্ষম প্যানেলের দাম পড়বে ৪ হাজার ডলার। যা স্থাপনে খরচ হবে ৫০০ ডলার। একটি প্যানেল থেকে ১ বছর পর্যন্ত পানি উৎপাদন করা যাবে।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইন্সটিটিউটের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৪ ভাগের ১ ভাগ মানুষ পানির সংকটে ভুগছে। আর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ ১৭ টি দেশে এ সমস্যা ভয়াবহ। এসব দেশে এ সমস্যার সমাধান দিতে পারবে এ সোর্স প্যানেল এমনটাই দাবী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির। সোর্স প্যানেল বাতাসের জলীয় বাষ্প কম হলে, অর্থাৎ শুষ্ক বাতাস থেকেও। এমনকি বাতাসের আর্দ্রতা ১০ ভাগের কম হলেও তা থেকে পানি উৎপাদন করতে পারো এ প্যানেল। এজন্য কোনো বৈদ্যুতিক সংযোগ, পরিবহণ পাইপ কিংবা আলাদা অবকাঠামো তৈরীর প্রয়োজন নেই। বছরে ১০ হাজার প্যানেল তৈরী করছে এ প্রতিষ্ঠানটি।